মাসিক বজ্র || শাহরে রমজান-২০১৯ || বিশেষ সংখ্যা || ছোটগল্প||
ছোট গল্প: উপকারের প্রতিদান"
সৈয়দুল করিম
_____________________একদা এক বালক একদিন পথদিয়ে হেঁটে যাচ্ছিল হঠাৎ ছেলেটি চায়ের দোকানে বসা লেখকের চোখে পড়ে,ছেলেটির গাঁয়ে ছিল ছেড়া পুরনো একজোড়া পোশাক,ছেলেটিকে দেখতে অন্যরকম লাগছিল তখন ছেলেটিকে লেখক ডাকলেন এবং পাশে বসালেন।লেখক ছেলেটিকে জিজ্ঞাসা করলেন তোমার নাম কি,বাড়ি কোথায়,কি করো? ছেলেটি বলল আমি নয়ন, আমার বাড়ি কক্সবাজার জেলার মহেশখালী উপজেলার ছোট্ট একটি গ্রামে, বাবা মা মারা যাওয়ার পর আমার পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যায়।জীবনের সাথে কষ্ট বসবাস করতে শুরু করল তাই ছোট্ট জীবন নিয়ে এই শহরে ছোটে আসলাম কিন্তু এখানেও কষ্ট, এই শহরে তাকার মত তেমন যায়গা পেলাম না,যার কারণে যেখানে রাত হয় সেখানে ঘুমিয়ে রাতকাটাতে হয়।আর যখন খুদা আসে তখন মানুষের ধারেধারে খুঁজে ভিজে খাঁই।আমার মত হতভাগার কপালে ছোটকাটো একটা কাজও মিলছেনা,নিজের ভরণ পোষণ যাতে মিটাতে পারি। তার কথা শুনে লেখক অবাক হলেন।লেখক বললেন তোমার পড়াশোনা করার ইচ্ছা আছে?ছেলেটি হেসে বলল যার থাকার কোন বাসস্থান নাই,আর আজকে এমনিতেই অনাথ, পড়াশোনার ভরণ পোষণ চালাবে আবার কে?লেখক ছেলেটিকে নিয়ে একটি রেস্তোরায় গেল এবং ছেলেটির ইচ্ছা মত খানা খাওয়ালেন। লেখক বলল চল আজ থেকে তুমি আমার সাথে থাকবে তোমার সব দায়িত্ব আমার,ছেলেটি লেখকের কথা শুনে অনেক খুশি হলেন। লেখক ছেলেটিকে তাঁর বাসায় আশ্রয় দিলেন, ছেলেটিকে একটি স্কুলে ভর্তি করিয়ে দেন,তখন ছেলেটি খুশি মনে দিনকাটাতে শুরু করল।সে ছিল খুবই মেধাবী ক্লাসের পড়া ক্লাসে শেষ করে,ছেলেটি স্কুল শিক্ষকদের কাছেও প্রিয় হয়ে ওঠেন। লেখক তার প্রতিভা দেখে অনেক মুগ্ধ হলেন,ছেলেটিকে নিয়ে স্বপ্ন দেখতে লাগলো লেখক।ছেলেটি প্রতিটি ক্লাসে প্রথম স্থান অর্জন করল।সাইন্স থেকে এস এস সি এইচ এস সি শেষ করেন এবং রসায়ন নিয়ে পড়াশোনা শুরু করেন,লেখক নিজেকে নিয়ে ভাবা ছেড়েছেন নিজের কথা চিন্তা না করে ছেলেটির ভরণ পোষণের করচ যোগাতেন। ছেলেটিকে সুশিক্ষিত করার জন্য, ছেলেটি অনেক পরিশ্রম করে রসায়ন বিদ্যায় সফলতা অর্জন করেন। একদিন ঢাকার মধ্যে রসায়নবিদরা একটি রসায়ন সাস্ত্র নিয়ে প্রতিযোগীতার আয়োজন করেন।প্রতিযোগীতার মধ্যে দেশবিদেশের হাজারো শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন,ছেলেটিও প্রতিযোগীতায় অংশ নেন।অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিল বিভিন্ন রাষ্ট্রের মন্ত্রীগণ। লেখকের বিশ্বাস ছিল ছেলেটি জয়লাভ করবে,অনুষ্ঠানে লেখক এককোণায় বসে দেখতেছে প্রতিযোগীতার দৃশ্য ,কিছুক্ষণের মধ্যে প্রতিযোগীতা শুরু হয়,লেখকের গড়া ছেলেটি সব শিক্ষার্থীকে প্রতিযোগিতায় পরাজিত করে প্রথম স্থান অধিকার করেন।উপস্থিত ব্যক্তিগণ অভিনন্দন জানিয়ে ফুলেরতোড়া দিতে যাচ্ছিল ছেলেটিকে, তখন ছেলেটি বলল ফুলেরতোড়া আমাকে মানাবে না,ফুলেরতোড়া তাঁকেই মানাবে যে আমাকে রাস্তা থেকে তুলে এনেছিল আজ এই যায়গায় আসার যোগ্যতা যোগাতে সক্ষম করেছেন তারি প্রাপ্য আজকের এই অভিনন্দন এই ভালবাসা, ঐ কোণায় বসে থাকা লোকটি আজ আমার জীবনকে আলোকিত করেছেন। আমাকে নতুন জীবন উপহার দিয়েছেন,কখনো নিজের কথা চিন্তা করেননি সর্বদা আমার করচ জোগাতে ব্যস্ত।আমার জন্য নিজের গাঁয়ে একজোড়া ভালো পোশাক পর্যন্ত তুলতেন না সবসময় আমাকেই সাজগোজ করে রাখতেন। আজকের সফলতার বিজয় মুকুট আমার প্রিয় অভিবাদকে বরণ করিয়ে দিন তখন সবাই মুগ্ধ হয়ে লেখককে ফুলের মালা দিয়ে বরণ করে নেন।লেখকের প্রশংসা করতে লাগল সবাই, লেখক আনন্দে ভরে উঠলেন। ছেলেটিকে লেখক জড়িয়ে আনন্দে কাঁদতে লাগলো।ছেলেটি রসায়নসাস্ত্র নিয়ে গবেষণা শুরু করেন,ছেলেটি কয়েক বছর পর লেখকের নামে একটি ইউনিভার্সিটি প্রতিষ্ঠা করেন।দরিদ্র পরিবারের ছেলেমেয়ে যাতে লেখাপড়া করার সুযোগ হয়,ছেলেটির যত উন্নয়ন কর্ম ছিল সবখানে লেখকের নামটায় দেখা যেত। ছেলেটি তার কর্ম হিসেবে রসায়নশাস্ত্র নিয়ে গবেষণা করে রাষ্ট্রের উন্নতি মুলক কাজ করে জান।এভাবে সে সফলতার সিঁড়ি দিয়ে শান্তির জগতে পা বাড়ান।সাথে শান্তির আলোচক লেখকের নামটিও দেশের সম্মানিত ব্যক্তিদের তালিকা ভূক্ত হয়।ছেলেটি লেখকের সেবক হিসাবে সারাজীবন পাশে থাকার জন্য মুগ্ধ হল।।
Comments
Post a Comment